আন্ডারগ্রাউন্ড ক্যাবল কি? ‍সুবিধা ও অসুবিধাসমূহ

 

এক বা একাধিক পরিবাহী এবং ইনসুলেশন সমন্নিত তার, যা নির্দিষ্ট পরিমাণ ভোল্টেজকে প্রতিরোধ করতে পারে, তাকেই ক্যাবল বলে। আর এ ক্যাবলকে মাটি খুঁড়ে রুট তৈরি করে কোনো নির্দিষ্ট পরিমাণ ভোল্টেজকে ট্রান্সমিশন, ডিস্ট্রিবিউশন করলে তখন তাকে ভূনিম্নস্থ ক্যাবল বা আন্ডারগ্রাউন্ড ক্যাবল বলে। 

শহর, ঘনবসতি এলাকা এবং যে সকল এলাকায় ওভারহেড লাইন টানা সম্ভব হয় না বা বিপজ্জনক সে-সকল ক্ষেত্রে ভূ-নিম্নস্থ ক্যাবল দ্বারা বৈদ্যুতিক পাওয়ার ট্রান্সমিশন এবং ডিস্ট্রিবিউশনের কাজ করা হয়। 

যেহেতু আন্ডারগ্রাউন্ড ক্যাবল সিস্টেমে ইলেকট্রিক্যাল পাওয়ার ট্রান্সমিশন বা ডিস্ট্রিবিউশন করা অত্যধিক ব্যয়বহুল তবু প্রয়োজনের তাগিদে বা কারিগরি আবশ্যকতা সাপেক্ষে অনেক ক্ষেত্রে আন্ডারগ্রাউন্ড পদ্ধতিতে বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে হয়। 

তবে আমাদের দেশে সাবস্টেশনে, সার্ভিস মেইন কানেকশনে আন্ডারগ্রাউন্ড এর ব্যবহার এত দিন সীমাবদ্ধতা থাকলেও পটুয়াখালী হতে ভোলা ট্রান্সমিশন লাইনে এবং সিদ্ধিরগঞ্জ ও হরিপুর লাইনে সাবমেরিন ক্যাবল ব্যবহার করা হয়েছে। এ ছাড়া পল্লিবিদ্যুতায়ন বোর্ড হালকা ইনসুলেশন দেয়া এরিয়াল (Aerial) ক্যাবল স্থাপন করছে

অ্যালুমিনিয়াম বা তামার পাকানো তারের কোর, পিভিসি বা তৈলসিক্ত কাগজের ইনসুলেশন, জলনিরোধক ধাতব আবরণ, ধাতব আর্মার (Armour) প্রভৃতি উপাদান দিয়ে ক্যাবল তৈরি করা হয় ।

আন্ডারগ্রাউন্ড ক্যাবল কি? (What are underground cables)

কোন নির্দিষ্ট পরিমাণ ভোল্টেজকে প্রতিরোধ করতে পারে, এমন পর্যাপ্ত ইনসুলেশনের সমন্বয়ে প্রস্তুতকৃত কন্ডাক্টর বা পরিবাহী যাদেরকে আন্ডার গ্রাউন্ড লাইনে ট্রান্সমিশন ও ডিস্ট্রিবিউশনের কাজে ব্যবহার করা হয়। তাকে ভূনিম্নস্থ ক্যাবল বা আন্ডারগ্রাউন্ড ক্যাবল (Underground cable) বলা হয়। 

ঘনবসতি, লো-ভোল্টেজ ডিস্ট্রিবিউশন সিস্টেমে আন্ডারগ্রাউন্ড ক্যাবল ব্যবহার করা সুবিধাজনক। আমাদের দেশে সাবস্টেশনে, সার্ভিস কানেকশনে আন্ডারগ্রাউন্ড ক্যাবলের ব্যবহার বেশি। ট্রান্সমিশন সিস্টেমে এখন আমাদের দেশে আন্ডারগ্রাউন্ড ক্যাবলের প্রয়োজন অত্যন্ত সীমিত। অ্যালুমিনিয়াম বা তামার পাকানো তারের কোর, পিভিসি বা তৈলসিক্ত কাগজের ইনসুলেশন, জন্মনিরোধক ধাতব আবরণ, ধাতব আর্মার (Armour) প্রভৃতি উপাদান দিয়ে ক্যাবল তৈরি করা হয়।

আন্ডারগ্রাউন্ড ক্যাবলের সুবিধাসমূহ (Advantages of underground cables)

আন্ডারগ্রাউন্ড ক্যাবলের কতকগুলো সুবিধা আছে, যা নিম্নে আলোকপাত করা হলো- 

১। আন্ডারগ্রাউন্ড সিস্টেম অধিক নিরাপদ যেখানে ওভারহেড লাইন টানা বিপজ্জনক বা অসুবিধাজনক সেখানে এবং ঘনবসতিপূর্ণ শহর এলাকায় আন্ডারগ্রাউন্ড ক্যাবল ব্যবহার করা হয়।

২। যেহেতু মাটির নিচে দিয়ে ক্যাবল নেয়া হয় সেজন্য ঝড়, হাওয়া, বজ্রপাত ইত্যাদির প্রভাব হতে মুক্ত থাকে, ফলে ঘন ঘন ত্রুটি দেখা দেয় না। কাজেই এর সার্বক্ষণিক রক্ষণাবেক্ষণের প্রয়োজন হয় না।

৩। শহর এলাকার সৌন্দর্য বজায় রাখতে ও নিরাপত্তা বিধানে আন্ডারগ্রাউন্ড ক্যাবল বেশ উপযোগী |

৪। আন্ডারগ্রাউন্ড সিস্টেমে কন্ডাক্টর স্পেসিং (Counductor spacing) কম হওয়ায় লাইনে ইন্ডাকটিভ রিয়্যাকট্যান্স-জনিত ড্রপ কম হয়। ফলে ভোল্টেজ রেগুলেশনের মান যথেষ্ট উন্নত হয়।

৫। ক্যাবলকে মাটির নিচে দিয়ে নেয়া হয় বলে কমুনিকেশন সার্কিটে কোনো প্রকার ইন্ডাকট্যান্সের প্রভাব আসে না। ফলে কমিউনিকেশন লাইনে বিঘ্নতার সৃষ্টি হয় না।

৬। আন্ডারগ্রাউন্ড সিস্টেম বজ্রপাত জনিত সার্জ (Surge) হতে মুক্ত, ফলে রক্ষণাবেক্ষণ খরচ কম হয়। 

আন্ডারগ্রাউন্ড ক্যাবলের অসুবিধাসমূহ (Disadvantages of underground cables)

আন্ডারগ্রাউন্ড সিস্টেমের কিছু কিছু অসুবিধাও আছে। এগুলো হচ্ছে-

১। আন্ডারগ্রাউন্ড সিস্টেমে প্রাথমিক ব্যয় অনেক বেশি।

২। ক্যাবল মাটির নিচে থাকে বলে কোনো দোষত্রুটি হলে ত্রুটিমুক্ত ক্যাবলের স্থান খুঁজে পাওয়া কষ্টসাধ্য।

৩। ইনসুলেশন খরচ বিবেচনা করে আন্ডারগ্রাউন্ড ক্যাবলের কার্যকরী ভোল্টেজ 33 KV-তে সীমিত রাখার চেষ্টা করা হয়।

৪। আন্ডারগ্রাউন্ড ক্যাবল সিস্টেমে কন্ডাক্টর স্পেসিং খুব কম থাকে বলে ক্যাবলের ক্যাপাসিট্যান্স-এর মান খুব বেশি, ফলে লাইন থেকে বেশি চার্জিং কারেন্ট গ্রহণ করে।

আরও পড়ুনঃ 

বুখলজ রিলে কি? কিভাবে কাজ করে? কোথায় ব্যবহার করা হয়?

অল্টারনেটর কি? এটি কিভাবে কাজ করে?

Post a Comment

Previous Post Next Post

Smartwatch

Random Products