মিডিয়াম ট্রান্সমিশন লাইনের ধ্রুবকগুলো কি এবং এর প্রভাবসমূহ?
ট্রান্সমিশন লাইনের ধ্রুবক হল; রেজিস্ট্যান্স, ইন্ডাকট্যান্স ও ক্যাপাসিট্যান্স। মধ্যম পরিবহন লাইনের সবগুলো লাইনেই ধ্রুবক বিবেচনা করা হয়। অর্থাৎ লাইনের রেজিস্ট্যান্স ও ইন্ডাকট্যান্স-এর সঙ্গে সঙ্গে ক্যাপাসিট্যান্সকেও বিবেচনা করা হয়ে থাকে।
লাইনের সমস্ত দৈর্ঘ্য বরাবর ক্যাপাসিট্যান্স সমভাবে বিস্তৃত থাকলেও ক্যালকুলেশনের সুবিধার্থে ক্যাপাসিট্যান্সের প্রতিক্রিয়া গ্রাহক ও প্রেরক প্রান্তে দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে কিংবা লাইনের মাঝখানে কেন্দ্রীভূত থাকে বলে বিবেচনা করা হয়।
যেহেতু স্বল্পদৈর্ঘ্যের পরিবহন লাইনের দৈর্ঘ্য কম এবং অপারেটিং ভোল্টেও কম, ফলে সেক্ষেত্রে ক্যাপাসিট্যাপ-এর প্রতিক্রিয়াকে উপেক্ষা করা যায়। কিন্তু মধ্যম পরিবহন লাইনের দৈর্ঘ্য যেহেতু বেশি (৫০ থেকে ১৫০ কিলোমিটার) এবং অপারেটিং ভোল্টেজও ২০ কেভি-এর উপরে, ফলে এক্ষেত্রে ক্যাপসিট্যান্স-এর প্রতিক্রিয়াকে উপেক্ষা করা যায় না। সে কারণে লাইনের হিসাব অধিকতর গ্রহণযোগ্য এবং সঠিক ফলাফল পাবার নিমিত্তে ক্যাপসিট্যান্স-এর এ প্রতিক্রিয়াকে অবশ্যই বিবেচনায় নিতে হয়।
লাইনের সর্বত্রই ক্যাপাসিট্যাপ সমভাবে বিরাজমান। কিন্তু হিসাবকে সহজ করে তোলার জন্য সমগ্র লাইনের ক্যাপাসিট্যান্সকে এক বা দুই স্থানে শান্ট ক্যাপাসিটর আকৃতিতে জমাকৃত অবস্থায় ধরে নেয়া হয়। সমগ্র লাইনের ক্যাপসিট্যান্সকে এভাবে একত্রীভূত অবস্থায় ধরে নিয়ে হিসাব করে যে ফলাফল পাওয়া যায়, সেটা মোটামুটি সঠিক হয়ে থাকে।
মধ্যম পরিবহন লাইনের ধ্রুবকসমূহের মান নির্ণয়ের জন্য তিন পদ্ধতি অনুসরণ করা হয়ে থাকে,
যথা-
১। প্রান্তিক ক্যাপাসিটর পদ্ধতি (End condenser method),
২। নমিনাল ‘T’ পদ্ধতি (Nominal T method),
৩। নমিনাল ‘স’ পদ্ধতি (Nominal ‘π’ method)
চলুন এবার ধ্রুবকগুলো নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা যাক।
ট্রান্সমিশন লাইনে রেজিস্ট্যান্স এর প্রভাবঃ
রেজিস্ট্যান্স নির্ভর করে পরিবাহীটি কোন ধাতুর তৈরি তার উপর । আমরা রেজিস্ট্যান্সের সূত্র হতে জানি, R = ρL/A। রেজিস্ট্যান্স-জনিত ইফেক্ট বলতে স্কিন ইফেক্ট, এডি কারেন্ট, হিসটেরেসিস, ডাই ইলেকট্রিক লস-জনিত বাধাকে বুঝায়।
ট্রান্সমিশন লাইনে ইন্ডাকট্যান্স এর প্রভাবঃ
যখন কোনো কন্ডাক্টরের ভিতর দিয়ে এসি কারেন্ট প্রবাহিত হয়, তখন পরিবর্তনশীল ফ্লাক্স কন্ডাকটরের সংস্পর্শে আসার কারণে কন্ডাক্টরের সেল্ফ ইন্ডাকট্যান্স-এর সৃষ্টি হয়।
সেলফ ইন্ডাকট্যান্স একটি বৈদ্যুতিক সার্কিটের ধর্ম বা বৈশিষ্ট্য, যা সার্কিটে প্রদত্ত কারেন্টের পরিবর্তনের হারে একই সার্কিটে আবিষ্ট ইএমএফ নির্ধারণ করে। এর প্রতীক L।
আমরা রিয়্যাকট্যান্সের সূত্র হতে পাই, XL = 2πfL এবং লাইন ড্রপ IXL, (লাইনের রিয়্যাকটিভ ড্রপ), যেখানে I = লাইনের কারেন্ট (অ্যাম্পিয়ারে)।
ট্রান্সমিশন লাইনে ক্যাপাসিট্যান্স এর প্রভাবঃ
আমরা জানি, যখন দুটি কন্ডাক্টরকে অপরিবাহী পদার্থ দ্বারা পৃথক করা হয় তখন সেখানে ক্যাপাসিটর গঠিত হয়। একইভাবে ওভারহেড ট্রান্সমিশন লাইনের দুটি কন্ডাক্টর যখন বায়ু দ্বারা পৃথক থাকে তখন এটি ক্যাপাসিটর হিসেবে কাজ করে। ক্যাপাসিট্যান্স, C = q/v farad এখানে,
C = Charge
V = Potential difference
নিচে ট্রান্সমিশন লাইনের ইউনিফরমলি ডিস্টিবিউটেড ক্যাপাসিটেন্স এবং লাইনের কনসেনট্রেটেড ক্যাপাসিটেন্স এর ফিগার দেওয়া হলঃ